২. খুলনা জেলা | Khulna District | ৬৪ জেলা-District 64
খুলনা বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম জেলা এবং তৃতীয় বৃহত্তম শহর।
খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৮৫ সালে এবং এ জেলা জাহানাবাদ নামেও পরিচিত
বৃটিশ ভারত তথা
অবিভক্ত বাংলার প্রথম মহকুমা এই খুলনা
খুলনার নামকরণ নিয়ে অনেক ধরনের মতোভেদ থাকলেও
অনেকে মনে করেন
ধনপতি সওদাগরের দ্বিতীয় স্ত্রী খুলনার নামে নির্মিত খুলনেশ্বরী মন্দির থেকে খুলনা নামের
উৎপত্তি। এছাড়াও ১৭৬৬ সালে ‘ফলমাউথ' জাহাজের নাবিকদের উদ্ধারকৃত রেকর্ডে লিখিত Culnea শব্দ থেকে খুলনা শব্দটি আসতে পারে। অনেক
বিজ্ঞজনের মতে ‘কিসমত খুলনা' মৌজা থেকে খুলনা নামের
উৎপত্তি হয়েছে। বৃটিশ আমলের মানচিত্রে লিখিত Jessore-Culna শব্দ থেকে খুলনা এসেছে
বলেও অনেকের ধারণা
খুলনা বাংলাদেশের অন্যতম শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায়
খুলনাকে শিল্প নগরী হিসেবেও ডাকা হয়।
এছাড়াও
খুলনাকে সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার বলা হয়।
এ জেলার উত্তরে যশোর, নড়াইল, পুর্বে বাগেরহাট,
পশ্চিমে সাতক্ষীরা এবং দক্ষিনে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত
রাজধানী সহ দেশের
অন্যান্য অঞ্চলের সংগে স্থলপথ, রেলপথ এবং জলপথ ব্যবহার করে খুলনার
সরাসরি যোগাযোগ সম্ভব
রাজধানী ঢাকা থেকে খুলনা শহরের দূরত্ব সড়কপথে ৩৩৩কি.মি
খুলনা শহর পৌর মর্যাদা অর্জন করে ১৯৮৪ সালে এবং
সিটি কর্পোরেশন মর্যাদা অর্জন করে ১৯৯০ সালে
হযরত পীর খাজা
খানজাহান আলী (র.) এর স্মৃতি বিজরিত ও ভৈরব-রূপসা বিধৌত খুলনার ইতিহাস-ঐতিহ্য গৌরব মন্ডিত
এ জেলার প্রধান বন হলো সুন্দরবন যা জাতিসংঘের ইউনেস্কো ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ৭৯৮ তম বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা
হিসেবে ঘোষণা করেছে।
কবি বঙ্কিমচন্দ্র
চট্টোপাধ্যায় খুলনার বকুলতলা বা জেলা প্রশাসকের বাংলোতে থাকাকালীল
রচনা করেছিলেন বাংলা সাহিত্যের প্রথম প্রেমের উপন্যাস ‘কপালকুন্ডলা’।
১৯৭১
সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও খুলনা স্বাধীন
হয়েছিল তার এক দিন পর অর্থাৎ ১৭ই ডিসেম্বর
খুলনা শহরে ১৯০২
সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারী বি. এল কলেজ এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার চাহিদা
মিটিয়ে আসছে। ১৯৯১ সালে খুলনাতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা মেডিকেল কলেজ
স্থাপিত হয় এবং ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
দেশের একমাত্র
রাষ্ট্রায়ত্ত তারশিল্প কারখানা বাংলাদেশ ক্যাবল শিল্প লিমিটেড এই খুলনায় অবস্থিত।
খুলনাকে এক সময়
বলা হত রুপালি শহর। এর কারণ এই এলাকাতে প্রচুর পরিমাণ চিংড়ী উৎপাদন করা হত।
খুলনায় আছে আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশন যা ১৯৫৬ সালে ভারত-পাকিস্থানের যুদ্ধের কারনে কলকাতার সাথে আন্তর্জাতিক
রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিস্তু ২০১৭
সালের ১৬ নভেম্বর আবার নতুন করে খুলনা-কলকাতা রেল যোগাযোগ চালু হয়
এ জেলার উপজেলা মোট ৯টি
এগুলো হলো
রূপসা,
তেরখাদা, দিঘলিয়া, ডুমুরিয়া, ফুলতলা, বাটিয়াঘাটা,
পাইকগাছা, দাকোপ এবং কয়রা
এ জেলার শিক্ষার হার ৬০.১ শতাংশ
প্রধান যে সকল নদ-নদী এ জেলায় অবস্থিত সেগুলো হলো
পশুর, ভদ্রা, ভৈরব, রূপসা,
শিবসা, কাজীবাছা, কপোতাক্ষ, আতাই, শোলমারী
এবং সুতারখালী
এ জেলার কিছু গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিদের মধ্যে
আছেন
ব্রজলাল শাস্ত্রী, যিনি খুলনা জেলায় প্রথম কলেজ
প্রতিষ্ঠকারী
শেখ
আকিজ উদ্দিন , আকিজ শিল্প গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা
এ জেলার খেলাধূলার
স্থানের মধ্যে অন্যতম হলো
খুলনা
জেলা স্টেডিয়াম এবং শেখ আবু নাসের বিভাগীয় স্টেডিয়াম যেটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে স্বীকৃত।
খুলনার দর্শনীয় কিছু স্থানের মধ্যে আছে
রূপসা নদীর তীরে ৭ বীরশ্রেষ্ঠর মধ্যে অন্যতম রুহুল
আমিনের মাজার
খালিশপুর
ওয়াইজমেন্ট ওয়ান্ডার ল্যান্ড শিশুপার্ক,
মুজগুন্নী শিশু
পার্ক,
জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট শিশু পার্ক ও চিড়িয়াখানা,
প্রেম কানন,
জাতিসংঘ শিশু পার্ক
কাস্টমঘাট,
খুলনা
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস,
খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস,
কুয়েট ক্যাম্পাস
সরকারি বিএল কলেজ
ক্যাম্পাস,
দৌলতপুর কৃষি কলেজ
সংলগ্ন ছবেদা বাগান
খুলনা রেলওয়ে স্টেশন
খুলনা বিভাগীয়
জাদুঘর
শহীদ হাদিস পার্ক
গল্লামারী লিনিয়ার
পার্ক
এবং
সোনাডাঙ্গা সোলার
পার্ক
খুলনা থেকে বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং মাসিক
পত্রিকা প্রকাশিত হয়।
তাই ঘুরে আসুন খুলনা!
শেয়ার খুলনা!!
No comments