ফেনী জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য । History and heritage of Feni district
ফেনী, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত
চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। উপজেলার সংখ্যাসারে এটি একটি বি
শ্রেণীভুক্ত জেলা।
ফেনী নদীর নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম রাখা
হয়েছে ফেনী। মধ্যযুগে কবি-সাহিত্যিকদের লেখায় একটি বিশেষ নদীর স্রোতধারা ও ফেরী পারাপারের
ঘাট হিসেবে ফনী শব্দের ব্যবহার পাওয়া যায়। সতের শতকে
মির্জা নাথানের ফার্সী ভাষায় রচিত বাহরিস্তান-ই-গায়েবীতে ফনী শব্দটি পরিবর্তিত
হয়ে ফেনী-তে পরিণত হয়।
১৯৮৪ সালের পূর্বে ফেনী নোয়াখালী জেলার একটি
মহকুমা ছিল। এ মহকুমার গোড়াপত্তন হয় ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মীরসরাই, ছাগলনাইয়া
ও আমীরগাঁও এর সমন্বয়ে।
এ জেলার মোট আয়তন ৯২৭.৩৪ বর্গ কিলোমিটার। রাজধানী
ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ১৬১ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে
প্রায় ৯৭ কিলোমিটার। এ জেলার পশ্চিমে নোয়াখালী জেলা, উত্তরে কুমিল্লা
জেলা ও ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ,
দক্ষিণ-পূর্বে
চট্টগ্রাম জেলা এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত।
ফেনী জেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়ক। সব ধরনের যানবাহনে এ জেলার সাথে
যোগাযোগ করা যায়। এছাড়া এ জেলায় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাও রয়েছে।
এ জেলার মানুষের প্রধান পেশা কৃষি ও প্রবাসী।
এছাড়াও এ জেলায় ৪টি বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
ফেনী জেলায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অবদান রেখে
যাচ্ছে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ১টি আধুনিক হাসপাতাল!
ফেনী জেলার উপজেলা ও থানা ৬টি এবং এগুলো হলোঃ
ছাগলনাইয়া, দাগনভূঞা, পরশুরাম, ফুলগাজী, ফেনী
সদর এবং সোনাগাজী
এছাড়াও এ জেলায় ৩টি সংসদীয় আসন রয়েছে।
এ জেলার শিক্ষার হার ৫৯.৬% এবং উল্লেখযোগ্য
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে আছে ১টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, ১১টি ডিগ্রী কলেজ এবং
৯৭টি মাদ্রাসা। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
ফেনী বিশ্ববিদ্যালয়
আলহাজ্ব আবদুল হক চৌধুরী ডিগ্রী কলেজ
সরকারি জিয়া মহিলা কলেজ
ফেনী সরকারি কলেজ
পরশুরাম ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা ইত্যাদি
ফেনী জেলার প্রধান প্রধান নদীগুলো হলঃ
ফেনী নদী, মুহুরী নদী, ছোট ফেনী নদী, কহুয়া নদী, সিলোনিয়া নদী এবং কালিদাস পাহালিয়া নদী।
এ জেলার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছেঃ
ফেনী নদী
ফেনী বিমানবন্দর
মুহুরী প্রজেক্ট
শমসের গাজীর কেল্লা
বিজয় সিংহ দীঘি
রাজাঝির দীঘি
চাঁদ গাজী ভুঞার মসজিদ
শর্শাদী শাহী মসজিদ
মোহাম্মদ আলী চৌধুরী মসজিদ
প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি
বাঁশপাড়া জমিদার বাড়ি
কালীদহ বরদা বাবু জমিদার বাড়ি
সেনেরখিল জমিদার বাড়ি
শিলুয়া মন্দির
সাত মঠ
কৈয়ারা দীঘি
জগন্নাথ কালী মন্দির
ভাষা শহীদ সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর
এ জেলার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে আছেনঃ
খালেদা জিয়া – রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশের
সাবেক এবং প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী।
শমসের গাজী – জমিদার, ব্রিটিশ বিরোধী
বিপ্লবী।
আবদুস সালাম – ভাষা শহীদ।
জহির রায়হান – ভাষা সৈনিক, চলচ্চিত্র
পরিচালক, ঔপন্যাসিক এবং গল্পকার।
আওরঙ্গজেব চৌধুরী – বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রাক্তন
প্রধান।
আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর
প্রাক্তন উপাচার্য।
আবদুল আউয়াল মিন্টু – এফবিসিসিআই সাবেক
প্রেসিডেন্ট, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি,
বাংলাদেশী
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
আবদুস সালাম – বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের
প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম মহাপরিচালক।
আবুল কালাম আজাদ চৌধুরী – বিশ্ববিদ্যালয়
মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা,
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রাক্তন উপাচার্য।
আমিন আহমদ – প্রাক্তন বিচারপতি।
আহমেদ ফজলুর রহমান – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রথম বাঙালি উপাচার্য।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী – সাংবাদিক নেতা এবং
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা, ডিবিসি নিউজের সভাপতি।
ইনামুল
হক – অভিনেতা, লেখক এবং নাট্যকার।
এ বি এম মূসা – সাংবাদিক এবং
বাংলাদেশী প্রাক্তন সংসদ সদস্য।
ওয়াসফিয়া নাজরীন – পর্বতারোহী, এভারেস্ট বিজয়ী দ্বিতীয় বাঙালি নারী।
গিয়াস উদ্দিন সেলিম – নাট্যকার, নাট্যনির্মাতা এবং চলচ্চিত্রকার।
জয়নাল হাজারী – বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশী প্রাক্তন সংসদ সদস্য এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার- চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম ও প্রথম মহিলা উপাচার্য।
মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী – প্রাক্তন সেনা
কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
শহীদুল্লা কায়সার- বাংলাদেশী
সাংবাদিক, লেখক ও বুদ্ধিজীবী।
নিজাম উদ্দিন হাজারী – সংসদ সদস্য
এবং বাংলাদেশী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
মকবুল আহমদ – বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাবেক
আমির।
মহম্মদ আবুল কাসেম – বাংলাদেশের বিশিষ্ট
ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতি।
মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন – ক্রিকেটার।
অভিনেত্রী- শমী কায়সার, রোকেয়া প্রাচী
শরিফা খাতুন – শিক্ষাবিদ এবং ভাষা সৈনিক।
বেগম শামসুন নাহার মাহমুদ- নারী মুক্তি
আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী, বিশিষ্ট
সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ এবং সমাজসেবিকা ৷
শাহরিয়ার কবির- লেখক, সাংবাদিক, প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা।
শেখ পাশা হাবিব উদ্দিন- বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম
প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাবেক মহাপরিচালক
আনিসুর রহমান আনিস- চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও মঞ্চ অভিনেতা
সেলিম আল দীন – নাট্যকার এবং গবেষক
হবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী – রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং ফুটবলার
No comments