শরীয়তপুর জেলা | Shariatpur District
শরীয়তপুর জেলা | Shariatpur District
শরীয়তপুর বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের একটি জেলা। শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন গঠিত হয় ১লা মার্চ ১৯৮৪ সালে এবং শরীয়তপুর পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৯০ সালে।
বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা হাজী শরীয়ত উল্লাহর নামে নামকরণকৃত এ অঞ্চলটি পদ্মা নদীর দক্ষিণে বদ্বীপ অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত বঙ্গ রাজ্যের অধীনে ছিলো। এরপর ইতিহাসের পরিক্রমায় কখনও এটি ঢাকা নিয়াবতের অধীন, কখনও বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার মাদারীপুর মহকুমার অন্তর্গত ছিল। পরবর্তীতে ১৯৭৭ সালের ৩রা নভেম্বর মহকুমা এবং সর্বশেষ ১৯৮৪ সালে এটি পৃথক জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
এ জেলার সংসদীয় আসন ২২১ থেকে ২২৩ পর্যন্ত। এ জেলার আয়তন: ১১৮১.৫৩ বর্গ কিমি।।
শরীয়তপুরের উত্তরে মুন্সিগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে বরিশাল জেলা, পূর্বে চাঁদপুর জেলা এবং পশ্চিমে মাদারীপুর জেলা অবস্থিত।
এ জেলাটি পদ্মা নদীর অববাহিকায় একটি চর এলাকা হওয়ায় এখানকার মাটি খুবই উর্বর। যার ফলে এখানে প্রচুর পরিমানে মসলার চাষ করা হয় যার মধ্যে আছে কালোজিরা, ধনিয়া এবং সরিষা। এছাড়াও এ অঞ্চলে নারিকেল, সুপারি, খেজুর ও তালগাছ প্রচুর পরিমানে জন্মে। এ জেলার কালোজিরা মধু খুবই বিখ্যাত। যদিও পূর্বে এই জেলা কাশা ও পিতলের তৈজষপত্র তৈরীর জন্য পরিচিত ছিল। বর্তমান পদ্মা বহুমুখী সেতুর একটি অংশ শরীয়তপুর জেলায় পড়েছে। এ জেলার ব্র্যান্ডিং লোগোতেও পদ্মাসেতু বড় একটি স্থান দখল করে আছে।
এ জেলায় একটি মেডিকেল কলেজ, ১টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১টি জেনারেল হাসপাতাল রয়েছে।
শরীয়তপুর জেলার উল্লেখযোগ্য নদীর মধ্যে রয়েছে পদ্মা, মেঘনা, পালং এবং কীর্তিনাশা নদী।
শরীয়তপুর জেলা ৭ টি থানা, ৫টি মিউনিসিপ্যালিটি নিয়ে গঠিত।
এই জেলার উপজেলাগুলো আছে ৬টি এবং এগুলো হলঃ
জাজিরা, শরীয়তপুর, গোসাইরহাট, ডামুড্যা, ভেদরগঞ্জ এবং নড়িয়া উপজেলা। এদের মধ্যে ভেদরগঞ্জ উপজেলা সর্ববৃহৎ (৩১১.২৪ বর্গ কিমি) এবং ডামুড্যা সবচেয়ে ছোট উপজেলা।
শরীয়তপুর জেলার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে
শরিয়তপুর সরকারি কলেজ
শরিয়তপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল এন্ড কলেজ
জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
এ জেলার উল্লেখযোগ্য এবং দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আছেঃ
পন্ডিত সাগর
মহিষারের দীঘি
মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম
আলুর বাজার ফেরিঘাট
রজনগর
পুলিশ লাইনস জামে মসজিদ
ফতেজঙ্গপুর মানসিংহের দূর্গ
নাওডোবা ফেরিঘাট
উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ
আঙ্গারিয়া ব্রিজ
রাজাগঞ্জ ব্রিজ
গয়াতোলা ব্রিজ
ধানুকার মনসা বাড়ি
বাহাদুল খলিলুর রহমান সিকদারের বাসস্থান
বুড়ির হাট ঐতিহ্যবাহী মসজিদ
রামসাধুর আশ্রম
রুদ্রকর মঠ
কার্তিকপুর জমিদার বাড়ি
শীবপুর তালুকদার বাড়ি জামে মসজিদ
সুরেশ্বর দরবার শরীফ
কবি অতুল প্রসাদ সেন ও তার বাড়ি
কথাসাহিত্যিক আবু ইসহাক এর বাড়ি
কবি ও রাজনিতীবিদ রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরীর বাড়ি
এ জেলার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে আছেনঃ
আবদুর রাজ্জাক - চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর
আনিছুর রহমান - ত্রয়োদশ নির্বাচন কমিশন হাবিবুল আউয়াল কমিশনের একজন নির্বাচন কমিশনার
এস. এম. গোলাম ফারুক - স্থানীয় সরকার বিভাগ এর সিনিয়র সচিব
কেদার রায় - বার ভুঁইয়ার ও বিক্রমপুর পরগনার জমিদার
গীতা দত্ত – সঙ্গীতশিল্পী
রাম ঠাকুর - হিন্দু ধর্মগুরু এবং সাধক;
পুলিন বিহারী দাস - ব্রিটিশ বিরোধী সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের ঢাকা অনুশীলন সমিতির প্রধান
অতুলপ্রসাদ সেন - আইন ব্যবসা ও গানের গীতিকার;
যোগেশচন্দ্র ঘোষ - আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বিশারদ এবং শিক্ষাবিদ; সাধনা ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা;
গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য - একজন বাঙালি পতঙ্গবিশারদ ও উদ্ভিদবিদ
গোষ্ঠ পাল - ভারত সরকার দ্বারা পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত ফুটবলার
গোলাম মওলা – পাকিস্তান শাসনামলে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে বিরোধী দলের হুইপ
আবু ইসহাক - কবি ও সাহিত্যিক, সূর্য দীঘল বাড়ী উপন্যাসের জন্য অধিক পরিচিত
কর্নেল (অবঃ) এ. শওকত আলী- প্রাক্তন ডেপুটি স্পীকার
এ জেড এম মোস্তাক হোসেন - রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় উপাচার্য
আব্দুর রাজ্জাক - প্রাক্তন পানি সম্পদ মন্ত্রী
রাজবল্লভ সেন - বিক্রমপুরের রাজা
এম. আজিজুল হক - সাবেক আইজিপি
এ কে এম এনামুল হক শামীম - পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী
এবং
এ কে এম শহীদুল হক - সাবেক আইজিপি
এ জেলা থেকে বিভিন্ন ধরনের দৈনিক এবং সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। শরীয়তপুর জেলা নিয়ে আপনার কোনো মন্তব্য থাকলে জানাতে পারেন কমেন্টে আর বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন শরীয়তপুর জেলাকে।
No comments