চাঁদপুর জেলা | Chandpur District
চাঁদপুর
চাঁদপুর বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগে অবস্থিত একটি জেলা। উপজেলার সংখ্যানুসারে চাঁদপুর বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা। পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে এ জেলা অবস্থিত। ইলিশ মাছের অন্যতম প্রজনন অঞ্চল হিসেবে চাঁদপুরকে ‘ইলিশের বাড়ি’ নামেও ডাকা হয়।
১৮৭৮ সালে ত্রিপুরা জেলা (পরবর্তীতে যা কুমিল্লা নামে পরিচিত) যে তিনটি মহকুমা নিয়ে গঠিত হয়, তার মধ্যে চাঁদপুর অন্যতম। ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুর জেলায় উন্নীত হয়।
বার ভূঁইয়াদের আমলে চাঁদপুর অঞ্চল বিক্রমপুরের জমিদার চাঁদরায়ের দখলে ছিল। এ অঞ্চলে তিনি একটি শাসনকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। ঐতিহাসিক জে এম সেনগুপ্তের মতে, চাঁদরায়ের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছে চাঁদপুর।
অন্যমতে, চাঁদপুর শহরের (কোড়ালিয়া) পুরিন্দপুর মহল্লার চাঁদ ফকিরের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম চাঁদপুর। কারো মতে, শাহ আহমেদ চাঁদ নামে একজন প্রশাসক দিল্লী থেকে পঞ্চদশ শতকে এখানে এসে একটি নদী বন্দর স্থাপন করেছিলেন। তার নামানুসারে এর নাম হয়েছে চাঁদপুর।
এ জেলার মোট আয়তন ১,৭০৪.০৬ বর্গ কিলোমিটার।[
রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ৯৬ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ২০৮ কিলোমিটার। এ জেলার দক্ষিণে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলা; উত্তর-পূর্বে কুমিল্লা জেলা, পশ্চিমে মুন্সিগঞ্জ জেলা, শরীয়তপুর জেলা ও বরিশাল জেলা অবস্থিত।
মুক্তিযুদ্ধের সময় চাঁদপুর ২নং সেক্টরের অধীনে ছিল।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে এ জেলায় আছে:
মুক্তিযুদ্ধের স্মারক, বধ্যভূমি, গণকবর ইত্যাদি।
২০১৭ সালে বাংলাদেশের প্রথম ব্র্যান্ডিং জেলা হিসেবে চাঁদপুরকে ইলিশের বাড়ি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
চাঁদপুর জেলা ৮টি থানা, ৮টি পৌরসভা ও ৫টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।
এছাড়াও এ জেলার উপজেলা আছে ৮টি আর এগুরো হলো:
কচুয়া
চাঁদপুর সদর
ফরিদগঞ্জ
মতলব উত্তর
মতলব দক্ষিণ
শাহরাস্তি
হাইমচর
হাজীগঞ্জ
এ জেলার সংসদীয় আসন ২৬০ থেকে ২৬৪ পর্যন্ত
বর্তমানে এ জেলার সাক্ষরতার হার ৬৯.৮০%
বিশ্ববিদ্যালয় : ১টি
মেডিকেল কলেজ : ১টি
সরকারি কলেজ : ৯টি
চাঁদপুর জেলার অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর। নদী তীরবর্তী এলাকা বলে প্রায় ৩০% মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মৎস্য শিল্পের সাথে জড়িত।
জেলার প্রধান শস্য ধান, পাট, গম, আখ। রপ্তানী পণ্যের মধ্যে রয়েছে নারিকেল, চিংড়ি, আলু, ইলিশ মাছ, সবুজ শাক-সবজি, বিসিক নগরীর তৈরি পোশাক শিল্প।
চাঁদপুর জেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক হল ঢাকা-চাঁদপুর মহাসড়ক এবং চট্টগ্রাম-চাঁদপুর মহাসড়ক। শুধুমাত্র চাঁদপুর জেলার জন্য আলাদা একটি রেলপথ রয়েছে, যার মাধ্যমে প্রতিদিন চাঁদপুর-চট্টগ্রাম এবং চাঁদপুর-কুমিল্লার আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন জেলা শহর থেকে নৌপথে যোগাযোগের জন্যে এ জেলায় রয়েছে চাঁদপুর নদী বন্দর।[
এ জেলার প্রধান ৪টি নদী হল মেঘনা, পদ্মা, ডাকাতিয়া ও ধনাগোদা নদী।
চাঁদপুর জেলায় স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবার জন্য রয়েছে:
জেনারেল হাসপাতাল : ১টি (২৫০ শয্যাবিশিষ্ট)
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : ৮টি
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র -আইসিডিডিআর,বি যা বাংলাদেশের একমাত্র উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র)
দর্শনীয় স্থান
অঙ্গীকার স্মৃতিসৌধ
ইলিশ চত্বর
চাঁদপুর বন্দর
মিনি কক্সবাজার, চাঁদপুর
মেঘনা নদীর তীর
হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ (৬ষ্ঠ বৃহত্তম)
শোল্লা জমিদার বাড়ি
রক্তধারা
শপথ চত্বর
চাঁদপুর স্টেডিয়াম
অরুণ নন্দী সুইমিংপুল
পুরাণবাজার বড় মসজিদ
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট
যাযাবর স্মৃতি ভবন
পুরাণবাজার হরিসভা মন্দির কমপ্লেক্স
অযাচক আশ্রম
চাঁদপুর নৌ বন্দর
ঐতিহাসিক বেগম জামে মসজিদ
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
অরুন নন্দী –– সাঁতারু।
আজিজ আহমেদ –– বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
আবু ওসমান চৌধুরী –– সেক্টর কমান্ডার, ৮নং সেক্টর, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ।
ডাঃ দীপু মনি –– রাজনীতিবিদ ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী
নওয়াব আলী –– ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ
প্রবীর মিত্র –– চলচ্চিত্র অভিনেতা
ওয়াসিম –– চলচ্চিত্র অভিনেতা
দিলদার –– অভিনেতা
সাদেক বাচ্চু –– অভিনেতা
মো. সবুর খান –– প্রতিষ্ঠাতা, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি
শাইখ সিরাজ -পরিচালক ও বার্তা প্রধান, চ্যানেল আই
পত্র-পত্রিকা
দৈনিক: ১৫টি
সাপ্তাহিক: ১২টি
পাক্ষিক: ২টি
মাসিক: ৩টি
অনলাইন পত্রিকা: ৪টি
No comments